Sunday, December 17, 2017

ফেব্রুয়ারির শেষে ঢাকা উত্তরের মেয়র নির্বাচন

আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ড ও ছয়টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) যুক্ত হওয়া নতুন ১৮টি ওয়ার্ড ও ছয়টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডেও নির্বাচন হবে। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে।
আজ নির্বাচন কমিশনের সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ এ কথা জানান।
হেলালুদ্দিন আহমদ জানান, নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোতে যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁদের মেয়াদ হবে এই সিটি করপোরেশনে বাকি মেয়াদ পর্যন্ত। তিনি দাবি করেন, নির্বাচন কমিশন আইনি দিক পর্যালোচনা করেছে। এই নির্বাচন নিয়ে আইনি কোনো জটিলতা নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে হেলালুদ্দিন আহমদ বলেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। যাঁরা এবার ভোটার হয়েছেন, তাঁরা নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন, তবে প্রার্থী হতে পারবেন না।--- source Prothom Alo

ত্যাগের মহিমায় নিজেদের গড়ে তুলতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শহীদদের ত্যাগের মহিমায় যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তুলে দেশকে সোনার বাংলায় পরিণত করার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সফল করতে আগামী প্রজন্মের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৭তম বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণদান কালে এই আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা যুব সমাজ আছে তাদেরকে আমি এইটুকুই বলবো- মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লাখো শহীদের যে ত্যাগ, সেই ত্যাগের মহিমায় নিজেদেরকে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। গড়ে তুলতে হবে বাংলাদেশকে।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ভাষণ দেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়য়ের উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে লাখো জনতা অংশগ্রহণ করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এবং সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিজয়ী জাতি একথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে। এক মুহূর্তের জন্য ভুললে চলবে না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কারো কাছে মাথা নত করি না। আমরা বিশ্বে মর্যাদার সাথে মাথা উঁচু করে চলবো। এটাই হোক আজকের দিনে আমাদের প্রতিজ্ঞা।’
প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদ এবং সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের এবং দেশের অভ্যন্তরে যারা মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। যারা সেদিন পাকিস্তানী হানাদারদের সাথে হাত মিলিয়ে আমাদের মা-বোনদের তুলে দিয়েছিল হানাদারদের হাতে, যারা আলবদর রাজাকার, আলশামস বাহিনী গড়ে তুলে মুক্তিকামী জনগণের মাঝে গণহত্যা চালিয়েছিল, অগ্নিসংযোগ করেছিল, লুটপাট করেছিল, এদেশের স্বাধীনতায় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল, তাদের প্রতি তিনি ঘৃণা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুব সমাজ আজকে উদ্বুদ্ধ হয়েছে, আজকে তারা এই উৎসব পালন করার সুযোগ পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের স্মৃতিচারণ করে বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেলেও তারা তখনও ধানমন্ডির ১৮ নম্বরের একটি বাড়িতে বন্দি ছিলেন। তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যায় এবং তাঁর মা, ছোট বোন, ভাই সহ সবাইকে ঐ বাড়িতে বন্দি করে রাখে। শেখ কামাল আগেই মুক্তিযুদ্ধে চলে গিয়েছিলেন। আর শেখ জামাল তাঁদের সঙ্গের বন্দিদশা থেকে গেরিলা কায়দায় পালিয়ে সেও মুক্তিযুদ্ধে চলে যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজয় উৎসবের সঙ্গে গলা মিলিয়ে তারা বন্দি অবস্থাতেই জয়বাংলা শ্লোগান ধরেছিলেন। পরে ১৭ ডিসেম্বর তাঁরা ঐ বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান।
তিনি বলেন, ‘সমগ্র ঢাকা শহর তখন জয় বাংলা শ্লোগানে মুখরিত। আমরা ধানমন্ডি ১৮ নম্বর রোডের বাড়িতে বন্দি কয়েকটি মানুষ, রাসেল, রেহানা, আমি ও আমার মা, ঐ বন্দিখানায়। চারিদিকে জয়বাংলা শ্লোগান, বাংলাদেশ মুক্ত। আমরা কয়েকজন রুদ্ধ দ্বার মুক্ত প্রাণ। বাইরে থেকে জয়বাংলা শ্লোগান আসে আমরা ভেতরে বসে ঐ শ্লোগানের সঙ্গে কন্ঠ মিলিয়ে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়েছি বন্দিখানায় পাকিস্তানীদের সামনে বসে। কিন্তুুু আমরা সেদিন মুক্তি পাইনি। মুক্তি পেয়েছিলাম তারপর দিন, ১৭ ডিসেম্বর।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে ’৭৫ এর ১৫ আগষ্ট হত্যার পর এদেশে ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র হয়েছিল। কিন্তুু বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেয়নি। তাই বাংলার মানুষকে আমি অভিনন্দন জানাই, সালাম জানাই।
এ সময় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো তাদের ওয়ার্ল্ড মেমোরি রেজিষ্টারে বিশ্বের অনন্য দলিল হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে স্বীকৃতি দেয়ায় সমগ্র বিশ্বে জাতি হিসেবে বাঙালি সম্মানিত হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছি তাই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বিশ্বে আজ বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। যেভাবে আমরা মুক্তিযুদ্ধের পরে মর্যাদা পেয়েছিলাম। যে মর্যাদা লুন্ঠিত হয়েছিল ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট। আজকে সে মর্যাদা আমরা আবার ফিরে পেয়েছি। আজকে সারাবিশ্ব বাঙালির দিকে তাকিয়ে থাকে। কাজেই এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। আর যেন কোন অন্যায় অবিচার বাংলার মানুষের ওপর না হয়। দেশের মানুষ যেন শান্তিতে থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী পরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উপস্থিত জনতার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।